ক্যান্সার শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে ভয় এবং উদ্বেগের জন্ম হয়। কিন্তু সঠিক তথ্য ও সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগটিকে বোঝা এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব। চলুন, সহজ ভাষায় ক্যান্সার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক, যাতে আমরা নিজেদের এবং প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখতে পারি।
ক্যান্সার কী?
এক কথায়, ক্যান্সার হলো শরীরের কোষের অস্বাভাবিক এবং অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি। আমাদের শরীর কোটি কোটি কোষ দিয়ে তৈরি, যেগুলো একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে বৃদ্ধি পায় এবং বিভাজিত হয়। যখন এই কোষগুলো পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তারা স্বাভাবিকভাবে মারা যায় এবং নতুন কোষ তাদের জায়গা নেয়।
কিন্তু যখন কোষের ডিএনএ (DNA) বা জেনেটিক উপাদানে কোনো স্থায়ী পরিবর্তন বা মিউটেশন ঘটে, তখন এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয়। এই পরিবর্তিত কোষগুলো আর নিয়ম মানে না। তারা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে এবং পুরনো কোষগুলোও মরে না। এই অতিরিক্ত কোষগুলো একত্রিত হয়ে একটি পিণ্ড বা টিউমার (Tumor) তৈরি করে। সব টিউমারই কিন্তু ক্যান্সার নয়; কিছু টিউমার নিরীহ (Benign) হয়, যা শরীরের অন্য অংশে ছড়ায় না। কিন্তু ক্ষতিকর (Malignant) টিউমারগুলোই হলো ক্যান্সার, যা আশেপাশের টিস্যু ধ্বংস করে এবং রক্ত বা লসিকা ব্যবস্থার মাধ্যমে শরীরের দূরবর্তী স্থানেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ছড়িয়ে পড়াকে মেটাস্ট্যাসিস (Metastasis) বলা হয়, যা ক্যান্সারকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।
ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরন: পরিচিত এবং প্রচলিত রূপগুলো
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, পৃথিবীতে ১০০টিরও বেশি ধরনের ক্যান্সার রয়েছে। প্রতিটি ক্যান্সারের ধরণ, আচরণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত কয়েকটি হলো:
- স্তন ক্যান্সার (Breast Cancer): এটি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। স্তনে অস্বাভাবিক পিণ্ড বা চাকা দেখা দেওয়া এর প্রধান লক্ষণ। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এর সফল চিকিৎসার হার অনেক বেশি।
- ফুসফুস ক্যান্সার (Lung Cancer): বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এই ক্যান্সার। এর প্রধান ঝুঁকি হলো ধূমপান। দীর্ঘস্থায়ী কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া এবং শ্বাসকষ্ট এর সাধারণ লক্ষণ।
- কোলন বা মলাশয় ক্যান্সার (Colon Cancer): এটি আমাদের হজমতন্ত্রের বৃহৎ অন্ত্রে হয়ে থাকে। হজমের অভ্যাসে পরিবর্তন, যেমন—ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া এর অন্যতম লক্ষণ।
- প্রোস্টেট ক্যান্সার (Prostate Cancer): এটি সাধারণত বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। প্রোস্টেট গ্রন্থির অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই এই ক্যান্সারের কারণ। প্রস্রাবের সমস্যা এর একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
এছাড়াও ত্বক, রক্ত (লিউকেমিয়া), এবং জরায়ুমুখের ক্যান্সারও বেশ প্রচলিত।
Cancer: ক্যান্সারের ঝুঁকি কাদের বেশি?
ক্যান্সার যেকোনো বয়সের এবং যেকোনো মানুষের হতে পারে, তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এগুলোকে বলা হয় রিস্ক ফ্যাক্টর (Risk Factors)।
- বয়স বৃদ্ধি: বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়ায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, তাই বয়স্কদের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
- পারিবারিক ইতিহাস (জেনেটিক্স): পরিবারে যদি কারো (বিশেষ করে বাবা-মা বা ভাই-বোন) ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তবে আপনার ঝুঁকি কিছুটা বেড়ে যায়। কারণ, কিছু নির্দিষ্ট জিনগত পরিবর্তন পরিবারে বাহিত হতে পারে।
- ধূমপান ও তামাক সেবন: এটি ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় প্রতিরোধযোগ্য কারণ। ধূমপান শুধু ফুসফুস নয়, মুখ, গলা, এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকিও মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে দেয়।
- অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা:
- অ্যালকোহল: অতিরিক্ত মদ্যপান লিভার, গলা, এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- স্থূলতা: শরীরের অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যেমন—স্তন এবং কোলন ক্যান্সার।
- খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, লাল মাংস (Red Meat), এবং কম পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- ভাইরাস সংক্রমণ: কিছু ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। যেমন—হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য এবং হেপাটাইটিস বি ও সি লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
- পরিবেশগত কারণ: দূষিত বায়ু, রাসায়নিক পদার্থ (যেমন—অ্যাসবেস্টস), এবং ক্ষতিকর রেডিয়েশনের (যেমন—সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি) সংস্পর্শে আসাও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্যান্সার কেন হয়?
ক্যান্সারের কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণ নেই। এটি সাধারণত একাধিক কারণের সম্মিলিত প্রভাবে হয়ে থাকে। প্রধান কারণগুলো হলো:
- জিনগত পরিবর্তন (Genetic Mutations): এটিই ক্যান্সারের মূল ভিত্তি। এই পরিবর্তন জন্মগতভাবে আসতে পারে (পারিবারিক ইতিহাস) অথবা জীবনযাত্রার কারণে অর্জিত হতে পারে (যেমন—ধূমপানের ফলে)।
- জীবনযাত্রার প্রভাব: আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসগুলো এক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, ধূমপান এবং মদ্যপানের মতো বিষয়গুলো আমাদের কোষের ডিএনএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্যান্সারের পথ তৈরি করে।
- পরিবেশগত প্রভাব: আমরা যে পরিবেশে বাস করি, তার উপাদানগুলোও আমাদের শরীরকে প্রভাবিত করে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষতিকর রাসায়নিক বা রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকলে ডিএনএ-এর গঠন পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে।
- দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immune System): আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত অস্বাভাবিক কোষগুলোকে শনাক্ত করে এবং ধ্বংস করে। কিন্তু যখন এই সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন এটি ক্যান্সার কোষগুলোকে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়।
ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ: শরীর কী সংকেত দিচ্ছে?
প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সারের লক্ষণগুলো খুবই সাধারণ হতে পারে, যা প্রায়ই আমরা উপেক্ষা করি। তবে শরীর যখন বারবার কোনো সংকেত দেয়, তখন সতর্ক হওয়া জরুরি। সাধারণ কিছু লক্ষণ হলো:
- শরীরের যেকোনো স্থানে অস্বাভাবিক ফোলা বা গুটি: স্তন, গলা, বগল বা অন্য কোথাও ব্যথাহীন চাকা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- অকারণে ওজন কমে যাওয়া: কোনো ধরনের ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই যদি হঠাৎ করে ওজন কমতে শুরু করে, তবে তা চিন্তার কারণ হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরেও যদি শরীর সব সময় ক্লান্ত লাগে, তবে এটি একটি লক্ষণ হতে পারে।
- ত্বকের পরিবর্তন: ত্বকে নতুন কোনো তিল, আঁচিল বা দাগ দেখা দিলে, অথবা পুরনো তিলের আকার বা রঙ পরিবর্তন হলে সতর্ক হোন।
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙা: যদি কাশি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা কাশির সঙ্গে রক্ত আসে, তবে এটি ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
- হজমের সমস্যা: একটানা হজমে অসুবিধা, গিলতে কষ্ট হওয়া, বা মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া কোলন বা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।
এই লক্ষণগুলো থাকা মানেই ক্যান্সার নয়, তবে এগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য কোন পরীক্ষাগুলো জরুরি?
সন্দেহ হলে চিকিৎসকরা সাধারণত কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সার আছে কি না তা নিশ্চিত করেন। প্রধান পরীক্ষাগুলো হলো:
- বায়োপসি (Biopsy): এটি ক্যান্সার নির্ণয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। এতে শরীরের সন্দেহজনক অংশ থেকে সামান্য টিস্যু বা কোষ নিয়ে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।
- রক্ত পরীক্ষা (Blood Tests): কিছু ক্যান্সার রক্তে নির্দিষ্ট প্রোটিন বা মার্কার তৈরি করে, যা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়।
- ইমেজিং টেস্ট (Imaging Tests):
- এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই: এই পরীক্ষাগুলো শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোর বিস্তারিত ছবি তৈরি করে, যা টিউমারের অবস্থান ও আকার বুঝতে সাহায্য করে।
- এন্ডোস্কোপি/কলোনোস্কোপি: একটি সরু টিউবের মাথায় ক্যামেরা লাগিয়ে এটি মুখ বা মলদ্বার দিয়ে প্রবেশ করিয়ে ভেতরের অঙ্গ, যেমন—পাকস্থলী বা কোলন, পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধের সেরা উপায়গুলো কী কী?
সুখবর হলো, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মাধ্যমে আমরা অনেকাংশেই এর ঝুঁকি কমাতে পারি।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল, শাকসবজি এবং ফাইবারযুক্ত খাবার রাখুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- ধূমপান ও তামাককে বিদায় জানান: এটি ক্যান্সার প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ।
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম, যেমন—দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা, শরীরকে সুস্থ রাখে।
- মদ্যপান পরিহার করুন: যদি সম্ভব হয়, অ্যালকোহল পুরোপুরি ত্যাগ করুন অথবা এর পরিমাণ সীমিত রাখুন।
- টিকা গ্রহণ করুন: HPV ভ্যাকসিন জরায়ুমুখের ক্যান্সার এবং হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: বিশেষ করে বয়স বাড়ার সাথে সাথে বা পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে নিয়মিত চেকআপ করান। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসার সাফল্য অনেক বেড়ে যায়।
ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি
ক্যান্সারের ধরন, পর্যায় এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। প্রধান চিকিৎসাগুলো হলো:
- সার্জারি (Surgery): এর মাধ্যমে শরীর থেকে ক্যান্সারযুক্ত টিউমার বা টিস্যু কেটে বাদ দেওয়া হয়।
- কেমোথেরাপি (Chemotherapy): এটি একটি ওষুধভিত্তিক চিকিৎসা, যেখানে শক্তিশালী রাসায়নিক ব্যবহার করে দ্রুত বিভাজিত হওয়া ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয়।
- রেডিয়েশন থেরাপি (Radiation Therapy): উচ্চ-শক্তিসম্পন্ন রশ্মি (যেমন—এক্স-রে) ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানের ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয় বা তাদের বৃদ্ধি থামিয়ে দেওয়া হয়।
- ইমিউনোথেরাপি (Immunotherapy): এটি একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে, যাতে শরীর নিজেই ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)
প্রশ্ন ১: ক্যান্সার কি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য?
উত্তর: হ্যাঁ, অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব। বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ে (Stage 1 বা 2) ধরা পড়লে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায়। তবে এটি ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায়ের উপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন ২: ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে রোগ?
উত্তর: একদমই না। ক্যান্সার কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মতো ছড়ায় না। একজন ক্যান্সার রোগীর সংস্পর্শে এলে অন্য কারো ক্যান্সার হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
প্রশ্ন ৩: ক্যান্সারের প্রথম এবং সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ কী?
উত্তর: এটি ক্যান্সারের ধরনের উপর নির্ভর করে। তবে শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক ও ব্যথাহীন গুটি বা ফোলা, অকারণে ওজন হ্রাস, বা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি কিছু সাধারণ প্রাথমিক লক্ষণ।
প্রশ্ন ৪: খাদ্যাভ্যাস কি সত্যিই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন—সসেজ, বার্গার) এবং ভাজাপোড়া খাবার কোলন, পাকস্থলীসহ বিভিন্ন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে, ফল ও শাকসবজি-সমৃদ্ধ খাবার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৫: ধূমপান কি কেবল ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণ?
উত্তর: না। যদিও ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধূমপান, এটি মুখ, গলা, খাদ্যনালী, কিডনি এবং মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেক বাড়িয়ে দেয়।
প্রশ্ন ৬: ক্যান্সার প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো এবং সহজ উপায় কী?
উত্তর: স্বাস্থ্যকর ও সক্রিয় জীবনযাপনই হলো সেরা উপায়। এর মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা, সুষম খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং সময়মতো টিকা নেওয়া। এর পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি।
শেষ কথা
ক্যান্সার নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর রোগ, তবে এটি অজেয় নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে আজ এর চিকিৎসা অনেক উন্নত। সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সচেতনতা। যদি আমরা ক্যান্সারের ঝুঁকি এবং লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানি এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করি, তবে এই রোগ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব। মনে রাখবেন, প্রতিরোধের চেয়ে ভালো চিকিৎসা আর কিছুই হতে পারে না।