ctype vs normal delivery

সিজারিয়ানের ভিড়ে নরমাল ডেলিভারি কি হারিয়ে যাচ্ছে? কখন সিজার আবশ্যক এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী?

Share This Post

বর্তমানে হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে গেলেই সিজারিয়ান ডেলিভারির (Caesarean Section) খবর বেশি শোনা যায়। একটা সময় ছিল যখন বেশিরভাগ ডেলিভারি স্বাভাবিক বা নরমাল পদ্ধতিতেই হতো, কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, একটি দেশে মোট ডেলিভারির ১০-১৫% সিজারিয়ান হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু ভারতে এই হার অনেক বেশি, বিশেষ করে বেসরকারি ক্ষেত্রে। এর পেছনে কি শুধুই চিকিৎসাগত কারণ, নাকি সামাজিক ও व्यावसायिक মানসিকতাও দায়ী? চলুন, বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।


সিজারিয়ান অপারেশন কখন চিকিৎসাগতভাবে আবশ্যক?

সিজারিয়ান একটি জীবনদায়ী অপারেশন, যা মা বা শিশুর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে করা অপরিহার্য। একজন ডাক্তার নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন:

১) শিশুর অবস্থান বা আকার সংক্রান্ত সমস্যা

  • ব্রিচ প্রেজেন্টেশন (Breech Presentation): শিশু যদি গর্ভে উল্টো অবস্থানে থাকে (মাথার বদলে পা বা নিতম্ব নিচের দিকে)।
  • ট্রান্সভার্স লাই (Transverse Lie): শিশু যদি আড়াআড়িভাবে থাকে।
  • ম্যাক্রোসোমিয়া (Macrosomia): শিশুর আকার যদি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বড় হয় এবং মায়ের পেলভিস বা শ্রোণীচক্র সরু হয়।

২) মায়ের স্বাস্থ্যগত সমস্যা

  • সিপিডি (Cephalo-Pelvic Disproportion): মায়ের শ্রোণীচক্রের তুলনায় শিশুর মাথা বড় হলে।
  • উচ্চ রক্তচাপ বা প্রি-এক্লাম্পসিয়া (Pre-eclampsia): গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তচাপ মারাত্মকভাবে বেড়ে গেলে বা খিঁচুনি হলে।
  • হার্টের সমস্যা: নরমাল ডেলিভারির চাপ যদি মায়ের হার্টের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়।
  • সংক্রমণ: মায়ের যদি এমন কোনো সংক্রমণ (যেমন—অ্যাকটিভ হার্পিস, এইচআইভি) থাকে যা যোনিপথে প্রসবের সময় শিশুর মধ্যে ছড়াতে পারে।
  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস: গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি শিশুর আকার বা স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

৩) প্রসবকালীন জটিলতা

  • লেবার প্রগ্রেস না হওয়া (Failure to Progress): দীর্ঘক্ষণ প্রসব ব্যথা থাকার পরও জরায়ুর মুখ না খুললে বা শিশু নিচে না নামলে।
  • ফিটাল ডিসট্রেস (Fetal Distress): প্রসবকালে শিশুর হৃদস্পন্দন অনিয়মিত বা বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে।
  • প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (Placenta Previa): গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা যদি জরায়ুর মুখে অবস্থান করে এবং প্রসবের পথ আটকে দেয়।
  • প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন (Placental Abruption): প্রসবের আগেই প্লাসেন্টা জরায়ুর গা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে।
  • কর্ড প্রোল্যাপস (Cord Prolapse): শিশুর জন্মের আগেই নাভি বা আম্বিলিকাল কর্ড বেরিয়ে এলে।

৪) পূর্ববর্তী সিজারিয়ানের ইতিহাস

  • যদি আগে দুটি বা তার বেশি সিজারিয়ান হয়ে থাকে, বা পূর্ববর্তী সিজারের ধরন জটিল হয়।

আরও পড়ুন:সুস্থ থাকতে দিনে কত ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন? বয়সভেদে জানুন ঘুমের সঠিক হিসাব


সিজারিয়ানের ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে?

সিজারিয়ান একটি বড় অপারেশন, তাই এর কিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি রয়েছে।

অপারেশনকালীন সমস্যা

  • অতিরিক্ত রক্তপাত: নরমাল ডেলিভারির তুলনায় রক্তপাতের পরিমাণ বেশি।
  • অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আঘাত: মূত্রথলি (Urinary Bladder) বা মূত্রনালীতে (Ureter) আঘাত লাগার সামান্য ঝুঁকি থাকে।
  • অ্যানেস্থেশিয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: স্পাইনাল বা জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়ার কারণে মাথাব্যথা, বমি বা অন্যান্য প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

অপারেশন-পরবর্তী সমস্যা

  • সংক্রমণ (Infection): কাটা জায়গায় বা জরায়ুতে সংক্রমণ হতে পারে।
  • ব্লাড ক্লট (Blood Clot): পায়ে বা ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি থাকে।
  • অ্যাডহেসন (Adhesion): অপারেশনের পর জরায়ু, অন্ত্র বা অন্যান্য অঙ্গ একে অপরের সাথে জড়িয়ে যেতে পারে, যা পরবর্তীকালে ব্যথা বা অন্যান্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • দীর্ঘ আরোগ্যকাল: নরমাল ডেলিভারির তুলনায় সেরে উঠতে বেশি সময় লাগে।
  • পরবর্তী গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি: প্লাসেন্টা প্রিভিয়া, প্লাসেন্টা অ্যাক্রিটা বা জরায়ু ফেটে যাওয়ার (Uterine Rupture) ঝুঁকি সামান্য বাড়ে।

সিজারিয়ানের হার কেন বাড়ছে? চিকিৎসাগত কারণের বাইরেও কিছু বিষয় রয়েছে

  • ব্যথা সহ্য করার ভয়: অনেক মা প্রসব ব্যথা সহ্য করতে চান না এবং পরিকল্পিত সিজারিয়ান বেছে নেন।
  • সামাজিক বা ব্যক্তিগত পছন্দ: নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে সন্তানের জন্ম দেওয়ার ইচ্ছা বা সিজারিয়ানকে ‘আধুনিক’ বা ‘আভিজাত্যের’ প্রতীক মনে করা।
  • হাসপাতাল বা ক্লিনিকের ব্যবসায়িক দিক: কিছু ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান করার অভিযোগ ওঠে, কারণ এতে প্যাকেজ বা বিল বেশি হয়।
  • ডাক্তারের সময় ও ঝুঁকি এড়ানোর প্রবণতা: নরমাল ডেলিভারির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় এবং ঝুঁকি বেশি থাকে। অনেক সময় চিকিৎসক সেই ঝুঁকি এড়াতে সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত নেন।

আরও পড়ুন:পাকস্থলীর আলসার: সম্পূর্ণ নিরাময় বনাম পুনরাবৃত্তি—কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

সিজারের পর কি নরমাল ডেলিভারি সম্ভব (VBAC)?

হ্যাঁ, সম্ভব। একে বলা হয় ভ্যাজাইনাল বার্থ আফটার সিজারিয়ান (VBAC)। তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়, যেমন—পূর্ববর্তী সিজারিয়ানের কারণ, জরায়ুর কাটার ধরন, বর্তমান গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা না থাকা ইত্যাদি। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এবং উপযুক্ত পরিকাঠামোযুক্ত হাসপাতালে VBAC চেষ্টা করা যেতে পারে।


তুলনায় নিরাপদ কী?

সন্তান জন্মের পদ্ধতি নিয়ে আধুনিক দম্পতিদের মধ্যে আলোচনা, বিতর্ক ও দ্বিধার শেষ নেই। একদিকে নরমাল ডেলিভারির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, অন্যদিকে সিজারিয়ান অপারেশনের পরিকল্পিত ও ব্যথাহীন বিকল্প। কিন্তু নিরাপত্তার নিরিখে কোনটি এগিয়ে? চলুন, দুটি পদ্ধতির ঝুঁকি ও সুবিধাগুলো নিরপেক্ষভাবে তুলনা করা যাক।


নরমাল ডেলিভারি (Vaginal Delivery)

এটি সন্তান প্রসবের প্রাকৃতিক এবং সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি।

সুবিধা

  • দ্রুত আরোগ্য: অপারেশনের কাটাছেঁড়া না থাকায় মায়েরা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।
  • কম রক্তপাত: সিজারিয়ানের তুলনায় রক্তপাতের পরিমাণ সাধারণত কম।
  • হাসপাতালে স্বল্প অবস্থান: সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়া যায়।
  • শিশুর জন্য উপকারী: প্রসবের সময় শিশু মায়ের যোনিপথের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে, যা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immune System) গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও, প্রসবের চাপের ফলে শিশুর ফুসফুস থেকে জলীয় পদার্থ বেরিয়ে যায়, যা শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে।
  • ব্রেস্টফিডিং: মায়েরা তাড়াতাড়ি ব্রেস্টফিডিং শুরু করতে পারেন।

ঝুঁকি

  • প্রসবকালীন ব্যথা: এটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা অনেক মা সহ্য করতে পারেন না।
  • পেরিনিয়াল টিয়ার (Perineal Tear): যোনিপথ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত টিস্যু ছিঁড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা সেরে উঠতে সময় লাগতে পারে।
  • অনিশ্চয়তা: প্রসব কখন শুরু হবে বা কতক্ষণ চলবে, তা আগে থেকে বলা যায় না।
  • জরুরি অবস্থার ঝুঁকি: প্রসবকালে হঠাৎ করে মা বা শিশুর কোনো জটিলতা দেখা দিলে জরুরি সিজারিয়ানের প্রয়োজন হতে পারে।

সিজারিয়ান সেকশন (Caesarean Section)

এটি একটি সার্জিক্যাল পদ্ধতি, যেখানে মায়ের পেটে এবং জরায়ুতে অপারেশন করে শিশুকে বের করা হয়।

সুবিধা

  • পরিকল্পিত প্রসব: আগে থেকে দিন-ক্ষণ ঠিক করে রাখা যায়।
  • ব্যথাহীন প্রক্রিয়া: অপারেশনের সময় অ্যানেস্থেশিয়ার কারণে কোনো ব্যথা অনুভূত হয় না।
  • জরুরি অবস্থায় জীবনদায়ী: যখন নরমাল ডেলিভারি মা বা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তখন সিজারিয়ান জীবন রক্ষা করে।

ঝুঁকি

  • বড় অপারেশন: এটি একটি মেজর সার্জারি, তাই এর সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলোও বেশি।
  • বেশি রক্তপাত ও সংক্রমণ: নরমাল ডেলিভারির চেয়ে রক্তপাত ও কাটা জায়গায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • দীর্ঘ আরোগ্যকাল: সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।
  • অ্যানেস্থেশিয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: মাথাব্যথা, বমি বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ক্ষতি: মূত্রথলি (Bladder) বা মূত্রনালীতে (Ureter) আঘাত লাগার সামান্য ঝুঁকি থাকে।
  • পরবর্তী গর্ভাবস্থায় জটিলতা: প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (গর্ভফুল নিচে থাকা), প্লাসেন্টা অ্যাক্রিটা (গর্ভফুল জরায়ুর দেওয়ালে গেঁথে যাওয়া) বা জরায়ু ফেটে যাওয়ার (Uterine Rupture) ঝুঁকি সামান্য বৃদ্ধি পায়।

তুলনামূলক সারণী: এক নজরে

বিষয়নরমাল ডেলিভারিসিজারিয়ান সেকশন
প্রক্রিয়াপ্রাকৃতিকসার্জিক্যাল
ব্যথাপ্রসবকালীন তীব্র ব্যথাঅপারেশনকালীন ব্যথাহীন, পরে কাটা জায়গায় ব্যথা
রক্তপাতকমতুলনামূলকভাবে বেশি
আরোগ্যদ্রুত (কয়েক দিন থেকে ২ সপ্তাহ)ধীর (৪ থেকে ৬ সপ্তাহ বা বেশি)
হাসপাতালে অবস্থান১-২ দিন৩-৫ দিন
শিশুর সুবিধাইমিউন সিস্টেম ও শ্বাসপ্রস্বাসের জন্য ভালোজরুরি অবস্থায় জীবনরক্ষা
মায়ের ঝুঁকিপেরিনিয়াল টিয়ার, অনিশ্চয়তাসংক্রমণ, ব্লাড ক্লট, পরবর্তী গর্ভাবস্থায় জটিলতা

উপসংহার:

যদি কোনো চিকিৎসাগত জটিলতা না থাকে, তবে নরমাল ডেলিভারি মা ও শিশু উভয়ের জন্যই সিজারিয়ানের চেয়ে বেশি নিরাপদ। এর আরোগ্যকাল সংক্ষিপ্ত এবং দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি কম।

তবে, সিজারিয়ান একটি জীবনদায়ী পদ্ধতি। যখন নরমাল ডেলিভারিতে মা বা শিশুর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে—যেমন শিশুর উল্টো অবস্থান, প্লাসেন্টা নিচে থাকা, বা ফিটাল ডিসট্রেস—তখন সিজারিয়ানই সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প।

শেষ পর্যন্ত, আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে নিরাপদ, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেরা ব্যক্তি হলেন আপনার চিকিৎসক। আপনার শারীরিক অবস্থা, শিশুর অবস্থান এবং অন্যান্য সব দিক বিবেচনা করে তিনি যে পরামর্শ দেবেন, সেটিই মেনে চলা উচিত।


FAQ: সিজারিয়ান ও নরমাল ডেলিভারি নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন

প্রশ্ন: সিজারিয়ান অপারেশন কখন আবশ্যক হয়?
উত্তর: যখন নরমাল ডেলিভারিতে মা বা শিশুর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে, যেমন—শিশুর উল্টো অবস্থান, প্লাসেন্টা নিচে থাকা, ফিটাল ডিসট্রেস, বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপের মতো জটিলতা থাকলে সিজারিয়ান আবশ্যক।

প্রশ্ন: সিজারিয়ানের ফলে পরবর্তীতে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: কাটা জায়গায় সংক্রমণ, অতিরিক্ত রক্তপাত, অ্যাডহেসন (অঙ্গ জড়িয়ে যাওয়া), এবং পরবর্তী গর্ভাবস্থায় সামান্য ঝুঁকি বাড়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্ন: সিজার করা বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কি কম হয়?
উত্তর: কিছু গবেষণা অনুযায়ী, নরমাল ডেলিভারির সময় শিশু মায়ের যোনিপথের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে, যা তার ইমিউন সিস্টেম গঠনে সাহায্য করে। তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনও চূড়ান্ত প্রমাণ নেই।

প্রশ্ন: নরমাল ডেলিভারি কি সিজারিয়ানের চেয়ে সবসময় ভালো?
উত্তর: চিকিৎসাগতভাবে প্রয়োজন না হলে নরমাল ডেলিভারি অবশ্যই শ্রেয়। এতে আরোগ্য দ্রুত হয়, রক্তপাত কম হয় এবং মা তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। কিন্তু জটিলতা থাকলে সিজারিয়ানই জীবনদায়ী।

প্রশ্ন: প্রথম বাচ্চা সিজার হলে দ্বিতীয়বার কি নরমাল ডেলিভারি সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, সম্ভব। একে VBAC বলা হয়। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয় এবং চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।


শেষ কথা

সিজারিয়ান সেকশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জীবনদায়ী সার্জারি, তবে এটি যেন প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে একটি সাধারণ নিয়মে পরিণত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। গর্ভবতী মা ও তার পরিবারের উচিত গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া, যেমন—নিয়মিত হাঁটা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের সাথে প্রতিটি বিকল্পের সুবিধা ও ঝুঁকি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন। মনে রাখবেন, লক্ষ্য হলো একটি সুস্থ মা ও একটি সুস্থ শিশু।


Share This Post