itching problem

চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়: ২ দিনেই দাদকে বলুন টাটা

Share This Post

দাদ বা চুলকানি ত্বকের একটি ছত্রাক সংক্রমণ, যা বিশেষত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় বেশি দেখা যায়। এটি লালচে দাগ, চুলকানি এবং ত্বকের আঁশ পড়া ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ভালো খবর হলো — কিছু প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আরাম পাওয়া সম্ভব ।


দাদ বা চুলকানির কারণ

দাদ সাধারণত Dermatophyte নামক ছত্রাক দ্বারা হয় যা ত্বকের বাহিরের স্তরে বৃদ্ধি পায়। এর কারণগুলো হলো :

  • ঘাম জমে থাকা ত্বক
  • অন্যের ব্যবহার্য পোশাক বা তোয়ালে ব্যবহার করা
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব
  • গরম ও আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘ সময় থাকা

শরীরের কোন কোন স্থানে দাদ হয়

দাদ শরীরের যেকোনো অংশে দেখা দিতে পারে, যেমন:

  • মাথার ত্বক (Tinea Capitis)
  • হাত বা পা (Tinea Manuum বা Tinea Pedis)
  • মুখ ও দাড়ির অংশ (Tinea Barbae)
  • নখ (Tinea Unguium)
    এসব ক্ষেত্রে ত্বক খসখসে, চুলকানিযুক্ত ও কখনও ব্যথাযুক্ত হয়ে ওঠে ।

আরও পড়ুন: বুকের চর্বি কমান | ঘরে ও জিমে চর্বি কমানোর Workout

চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

১. রসুন (Garlic):
রসুনে থাকা Allicin উপাদান ছত্রাক ধ্বংস করে। একটি রসুন কোয়া কেটে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে একবার করলেই ২–৩ দিনে ফল দেখা দেয় ।

২. নিম পাতা (Neem):
নিমের অ্যান্টিফাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা দাদ সারাতে কার্যকর। কিছু নিম পাতা ফুটিয়ে জলে ঠান্ডা করে সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করুন বা নিম পেস্ট লাগান ।

৩. আপেল সিডার ভিনেগার (Apple Cider Vinegar):
একটি তুলো বল ভিনেগারে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। এর অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ সংক্রমণ কমায় ।

৪. অ্যালোভেরা (Aloe Vera):
ঘৃতকুমারী জেল ত্বকের প্রদাহ ও চুলকানি কমিয়ে আনে। এটি দিনে দু’বার লাগাতে পারেন ।

৫. নারকেল তেল (Coconut Oil):
লরিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই তেল দাদের ফাঙ্গাস মারে এবং ত্বক মসৃণ রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে আক্রান্ত স্থানে লাগান ।

৬. হলুদ (Turmeric):
হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। পেস্ট বানিয়ে লাগান এবং শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

৭. লেমনগ্রাস এবং ক্যালেন্ডুলা (Lemongrass & Calendula):
লেমনগ্রাসের Citral ছত্রাক ধ্বংস করে, আর ক্যালেন্ডুলা প্রদাহ কমিয়ে ত্বক সতেজ রাখে ।


আরও পড়ুন: বুকের চর্বি কমান | ঘরে ও জিমে চর্বি কমানোর Workout

দাদের সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়

  • প্রতিদিন গোসল করুন এবং শরীর সম্পূর্ণ শুকিয়ে রাখুন।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির পোশাক বা তোয়ালে ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • বেশি আঁটসাঁট পোশাক এড়িয়ে চলুন।
  • অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খান।
  • নিয়মিত জামা-কাপড় ধুয়ে রোদে শুকান ।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে যায়, একাধিক স্থানে দাদ দেখা দেয়, বা কয়েকদিনের মধ্যে উন্নতি না হয় — তাহলে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন ।


উপসংহার

প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যবহার করে এবং ত্বক পরিষ্কার-শুকনো রেখে দাদ নিরাময় করা সহজ। তবে সংক্রমণ দ্রুত না কমলে বা পুনরায় ফিরে এলে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য। সচেতনতা ও নিয়মিত যত্নই হলো সুস্থ ত্বকের মূল রহস্য ।


সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: দাদ বা চুলকানি কত দিনে সারানো যায়?
উত্তর: নিয়মিত ঘরোয়া উপায় ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে সাধারণত ৫–৭ দিনের মধ্যেই আরাম পাওয়া যায় ।

প্রশ্ন ২: চুলকানি সময় কি আক্রান্ত স্থান চুলকানো উচিত?
উত্তর: না, এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে। বরং ঠান্ডা পানি বা অ্যালোভেরা জেল লাগানো বেশি উপকারী ।

প্রশ্ন ৩: নারকেল তেল কি সত্যিই দাদ সারায়?
উত্তর: হ্যাঁ, এতে থাকা অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান সংক্রমণ ধ্বংস করে এবং ত্বক নরম রাখে ।

প্রশ্ন ৪: শিশুদের দাদ হলে কি ঘরোয়া চিকিৎসা করা যায়?
উত্তর: শিশুদের ক্ষেত্রে হালকা প্রয়োগ করা যেতে পারে, তবে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি ।

প্রশ্ন ৫: দাদ যাতে ফিরে না আসে, এজন্য কী করবেন?
উত্তর: ত্বক সবসময় পরিষ্কার, শুকনো ও ঘাম-মুক্ত রাখুন। ব্যক্তিগত জিনিস আলাদা রাখুন এবং স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করুন ।


Share This Post