দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের ঘরোয়া প্রতিকার কি?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় হয় কেন? কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

Share This Post

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় (Gum Recession) একটি সাধারণ সমস্যা, যেখানে দাঁতের চারপাশের মাড়ির টিস্যু সরে যেতে শুরু করে, ফলে দাঁতের গোঁড়া উন্মুক্ত হয়ে যায়। এর ফলে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং দাঁতের ক্ষয়, সংক্রমণ ও দাঁত হারানোর ঝুঁকি বাড়ে। অনেকেই এই সমস্যাটিকে তেমন গুরুত্ব দেন না, যতক্ষণ না এটি গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছায়। কিন্তু শুরুতেই এর কারণ, লক্ষণ ও সঠিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানা থাকলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আসুন, দাঁতের মাড়ি ক্ষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

সংক্রমণের লক্ষণগুলি কী কী?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় সরাসরি সংক্রমণ নয়, তবে ক্ষয়ের ফলে দাঁতের গোঁড়া উন্মুক্ত হলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সংক্রমণের লক্ষণগুলি নিম্নরূপ হতে পারে:

  • মাড়িতে লালচে ভাব ও ফোলা : মাড়ি সংক্রমিত হলে লালচে এবং ফোলা দেখাতে পারে।
  • মাড়ি থেকে রক্তপাত : দাঁত ব্রাশ করার সময় বা এমনিতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়া সংক্রমণের একটি লক্ষণ।
  • মাড়িতে ব্যথা বা অস্বস্তি : সংক্রমিত মাড়িতে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
  • পুঁজ বের হওয়া : মাড়ির গোঁড়া থেকে পুঁজ বের হলে তা গুরুতর সংক্রমণের ইঙ্গিত দেয়।
  • মুখে দুর্গন্ধ : মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দুর্গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে।
  • দাঁত নড়বড়ে লাগা : সংক্রমণ দাঁতের সহায়ক টিস্যুতে ছড়িয়ে গেলে দাঁত নড়বড়ে মনে হতে পারে।

জটিলতাগুলি কী কী?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের চিকিৎসা না করালে বা সংক্রমণ হলে নিম্নলিখিত জটিলতাগুলি দেখা দিতে পারে:

  • দাঁতের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি : উন্মুক্ত দাঁতের গোঁড়া ঠান্ডা, গরম বা মিষ্টি খাবারের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।
  • দাঁতের ক্ষয় : উন্মুক্ত দাঁতের গোঁড়ায় ব্যাকটেরিয়া সহজেই আক্রমণ করে ক্ষয় সৃষ্টি করতে পারে।
  • মাড়ির সংক্রমণ: দাঁতের গোঁড়ায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছড়িয়ে মাড়ির রোগ (যেমন পেরিওডন্টাইটিস) সৃষ্টি করতে পারে।
  • দাঁত আলগা হয়ে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া : মাড়ির রোগ দাঁতের সহায়ক হাড়কে দুর্বল করে দেয়, ফলে দাঁত আলগা হয়ে পড়ে যেতে পারে।
  • মুখের অন্যান্য অংশে সংক্রমণ ছড়ানো : মুখের সংক্রমণ রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে যেতে পারে।

সংক্রমণের কারণগুলি কী কী?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের প্রধান কারণগুলি হল:

  • অপর্যাপ্ত মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যবিধি : নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করা, ফ্লস ব্যবহার না করা এবং মুখ পরিষ্কার না রাখার কারণে দাঁতের গোঁড়ায় প্লাক ও টারটার জমা হয়, যা মাড়ির ক্ষয় শুরু করে।
  • মাড়ির রোগ : জিনজিভাইটিস (gingivitis) এবং পেরিওডন্টাইটিস (periodontitis) এর মতো মাড়ির রোগ মাড়ির টিস্যুকে ধ্বংস করে ক্ষয়ের দিকে ধাবিত করে।
  • অতিরিক্ত জোরে দাঁত ব্রাশ করা : খুব জোরে এবং ভুল পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করলে মাড়ির টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ক্ষয় হতে পারে।
  • জিনগত কারণ : কিছু লোকের বংশগতভাবে মাড়ি ক্ষয়ের প্রবণতা বেশি থাকে।
  • ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার : ধূমপান মাড়ির রক্ত ​​সঞ্চালনকে ব্যাহত করে এবং মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।
  • দাঁত কিড়মিড় করা : রাতে বা দিনের বেলায় দাঁত কিড়মিড় করলে দাঁতের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং মাড়ির ক্ষয় হতে পারে।
  • অসমতল দাঁত বা কামড় : দাঁতের অবস্থান বা কামড়ের সমস্যা থাকলে কিছু দাঁতের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে মাড়ির ক্ষয় হতে পারে।
  • হরমোনের পরিবর্তন : গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়ি সংবেদনশীল হতে পারে এবং ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে।
  • কিছু ঔষধ : কিছু ঔষধের কারণে মুখ শুষ্ক হয়ে যায়, যা মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে ক্ষয় ঘটাতে পারে।
  • ডায়াবেটিস (Diabetes): ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাড়ির রোগ এবং ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি থাকে।

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের প্রতিরোধ কি ?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় প্রতিরোধ করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

  • সঠিক মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা : দিনে দুবার নরম ব্রিসলের টুথব্রাশ দিয়ে সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করুন এবং প্রতিদিন একবার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন।
  • নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া : বছরে অন্তত দুবার ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরীক্ষা করান এবং পেশাদারভাবে দাঁত পরিষ্কার করান (স্কেলিং)।
  • ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করা : ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন।
  • সুষম আহার গ্রহণ করুন: ভিটামিন সি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খান যা মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • দাঁত কিড়মিড় করা নিয়ন্ত্রণ : যদি দাঁত কিড়মিড় করার অভ্যাস থাকে, তবে ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী নাইট গার্ড (night guard) ব্যবহার করুন।
  • সঠিক ব্রাশ করার কৌশল অবলম্বন : ডেন্টিস্টের কাছ থেকে সঠিক ব্রাশ করার কৌশল শিখে নিন এবং অতিরিক্ত চাপ দেওয়া পরিহার করুন।
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া এড়ানো: পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়ার কারণ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় কিভাবে নির্ণয় করা হয়?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় নির্ণয়ের জন্য ডেন্টিস্ট নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করতে পারেন:

  • শারীরিক পরীক্ষা : ডেন্টিস্ট আপনার মাড়ি পরীক্ষা করবেন, ক্ষয়ের পরিমাণ দেখবেন এবং দাঁতের গোঁড়া কতটা উন্মুক্ত হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করবেন।
  • মাড়ির গভীরতা পরিমাপ : একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে দাঁত এবং মাড়ির মধ্যে ফাঁকের গভীরতা মাপা হয়। গভীর ফাঁক মাড়ির রোগের ইঙ্গিত দেয়।
  • এক্স-রে (X-ray): দাঁতের এবং চোয়ালের হাড়ের এক্স-রে করা হয় যাতে হাড়ের ক্ষয় এবং দাঁতের সহায়ক টিস্যুর অবস্থা জানা যায়।

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের চিকিৎসা কি?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের চিকিৎসা ক্ষয়ের কারণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে। চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হল ক্ষয়ের অগ্রগতি থামানো, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং দাঁতের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা। কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি হল:

  • পেশাদার দাঁত পরিষ্কার : ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দাঁতের প্লাক ও টারটার সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করানো (স্কেলিং ও রুটিং প্ল্যানিং)।
  • ফ্ল্যাপ সার্জারি (Flap surgery): এই পদ্ধতিতে মাড়ি সামান্য সরিয়ে দাঁতের গোঁড়া ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয় এবং প্রয়োজনে হাড়ের গ্রাফটিংও করা যেতে পারে।
  • টিস্যু গ্রাফটিং (Tissue grafting): ক্ষয় হওয়া মাড়ির টিস্যুকে পুনরুদ্ধার করার জন্য শরীরের অন্য অংশ থেকে বা ডোনার টিস্যু ব্যবহার করে গ্রাফটিং করা হয়।
  • পুনর্জন্মমূলক পদ্ধতি (Regenerative procedures): হাড় এবং টিস্যু পুনর্গঠনের জন্য বিশেষ ধরণের মেমব্রেন এবং প্রোটিন ব্যবহার করা হয়।
  • অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (Orthodontic treatment): দাঁতের অবস্থান বা কামড়ের সমস্যার কারণে মাড়ি ক্ষয় হলে অর্থোডন্টিক চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁতের সঠিক বিন্যাস করা হয়।
  • লেজার থেরাপি (Laser therapy): কিছু ক্ষেত্রে মাড়ির রোগ এবং ক্ষয় নিরাময়ের জন্য লেজার থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
How to prevent tooth decay
How to prevent tooth decay

দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের ঘরোয়া প্রতিকার কি?

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় রোধে বা প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার সাহায্য করতে পারে, তবে এগুলো ডাক্তারের চিকিৎসার বিকল্প নয়:

  • লবণ জলের কুলকুচি : হালকা গরম জলে লবণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার কুলকুচি করলে মাড়ির প্রদাহ কমতে পারে।
  • নিম তেল (Neem tel): নিমের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। সামান্য নিম তেল মাড়িতে মালিশ করতে পারেন।
  • হলুদ (Holud): হলুদের অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ মাড়ির সংক্রমণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। হলুদ গুঁড়ো মাড়িতে লাগাতে পারেন।
  • অ্যালোভেরা (Aloe vera): অ্যালোভেরার প্রশান্তিদায়ক গুণ মাড়ির জ্বালা কমাতে পারে। অ্যালোভেরা জেল মাড়িতে লাগাতে পারেন।
  • গ্রিন টি (Green tea): গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। গ্রিন টি পান করা বা ঠান্ডা করে কুলকুচি করা যেতে পারে।

দাঁতের ক্ষয় করণীয় এবং করণীয় নয় :

করণীয়:

  • দিনে দুবার নরম ব্রিসলের ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
  • প্রতিদিন ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন।
  • নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে যান।
  • সুষম আহার গ্রহণ করুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।
  • ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।

করণীয় নয়:

  • অতিরিক্ত জোরে দাঁত ব্রাশ করবেন না।
  • তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করবেন না।
  • মিষ্টি ও অ্যাসিডিক খাবার বেশি খাবেন না।
  • মাড়ির সমস্যা উপেক্ষা করবেন না।
  • নিজে থেকে ঔষধ ব্যবহার করবেন না।
  • ধারালো কিছু দিয়ে দাঁত বা মাড়ি খোঁচাবেন না।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য :

  • দাঁতের ক্ষয় রোধের ঔষধ নাম :
    দাঁতের ক্ষয় রোধের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ঔষধ নেই। তবে, ফ্লুরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করে ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে। মাড়ির রোগের চিকিৎসার জন্য ডেন্টিস্ট অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিতে পারেন।
  • দাঁতের ক্ষয় রোধ করার ঘরোয়া উপায় :
    উপরে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার উল্লেখ করা হয়েছে যা মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
  • দাঁতের মাড়ি ক্ষয় রোধে করণীয় :
    নিয়মিত সঠিক মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা মাড়ি ক্ষয় রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
  • দাঁতের ক্ষয় রোধের হোমিওপ্যাথি ঔষধ :
    হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় দাঁতের ক্ষয় রোধের জন্য বিভিন্ন ঔষধের উল্লেখ থাকলেও, এর কার্যকারিতা নিয়ে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বন্ধ করার ঔষধ :
    দাঁত ব্রাশ করার সময় বা এমনিতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে তা মাড়ির রোগের লক্ষণ হতে পারে। এর জন্য ডেন্টিস্ট অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ বা অন্যান্য ঔষধ দিতে পারেন। তবে, কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা জরুরি।
  • দাঁতের মাড়িতে ঘা এর ঔষধ :
    দাঁতের মাড়িতে ঘা হলে ডেন্টিস্ট অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ বা টপিক্যাল জেল ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন। ঘা এর কারণের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে।
  • দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশনের ঔষধ :
    দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে ডেন্টিস্ট অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দিতে পারেন। সংক্রমণের তীব্রতা অনুযায়ী ঔষধের ধরণ ও ডোজ নির্ধারিত হয়।
  • “আমার মাড়ি দিন দিন সরে যাচ্ছে, এটা কি খুব খারাপ কিছু?”
    উত্তর: হ্যাঁ, দাঁতের মাড়ি সরে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা। এর চিকিৎসা না করালে দাঁত সংবেদনশীল হতে পারে, ক্ষয় হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত দাঁত পড়েও যেতে পারে। দ্রুত ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।
  • “মাড়ির ক্ষয় কি আবার আগের মতো হয়?”
    উত্তর: প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মাড়ির ক্ষয় রোধ করা সম্ভব। তবে, একবার টিস্যু ক্ষয় হয়ে গেলে তা সম্পূর্ণরূপে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হতে পারে। টিস্যু গ্রাফটিং এর মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে মাড়ি পুনরুদ্ধার করা যায়।
  • “আমি ধূমপান করি, আমার মাড়ির ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা কতটা?”
    উত্তর: ধূমপান মাড়ির রক্ত ​​সঞ্চালনকে ব্যাহত করে এবং মাড়ির রোগের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। ধূমপানকারীদের মাড়ি ক্ষয়ের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।
  • “গর্ভাবস্থায় আমার মাড়ি ফুলে গেছে এবং রক্ত পড়ছে, এটা কি মাড়ির ক্ষয়?”
    উত্তর: গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়ি সংবেদনশীল হতে পারে এবং ফুলে রক্ত পড়তে পারে (গর্ভাবস্থার জিনজিভাইটিস)। তবে, এটি মাড়ি ক্ষয় নয়। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

দাঁতের মাড়ি ক্ষয় একটি নীরব ঘাতক হতে পারে যা ধীরে ধীরে আপনার দাঁতের স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়। তাই, এর লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং শুরুতেই সঠিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আপনার মুখের স্বাস্থ্য আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।


Share This Post

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।