ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ে একটি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, দৃষ্টিশক্তি হারানোসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। ওষুধের পাশাপাশি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এর মূল চাবিকাঠি হলো একটি সুপরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস। কী খাবেন এবং ডায়াবেটিসে কী খাবেন না – এই দুটি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করতে সাহায্য করে।
কেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস এত জরুরি?
ডায়াবেটিস মানেই রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) মাত্রা বেড়ে যাওয়া। আমরা যে খাবার খাই, তা থেকে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। তাই, খাবার নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা রক্তে শর্করার মাত্রা সরাসরি প্রভাবিত করতে পারি। একটি সুষম এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে, রক্তে শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি কেবল রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণই নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন:
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এমন খাবার বেছে নেওয়া উচিত, যা রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায় এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। নিচে কিছু প্রধান খাদ্যশ্রেণী এবং তাদের উদাহরণ দেওয়া হলো:
১. কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত শস্য ও শস্যজাতীয় খাবার:
কম GI যুক্ত খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না, যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
বাদামী চাল (Brown Rice) বা হাতে ভানা চাল: সাদা চালের চেয়ে ফাইবার বেশি থাকে এবং এটি ধীরে ধীরে হজম হয়।
আটা রুটি/লাল আটার রুটি/জোয়ার বা বাজরার রুটি: ময়দার রুটির চেয়ে বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ।
ওটস (Oats): সকালের নাস্তায় চিনি ছাড়া জল বা দুধ দিয়ে তৈরি ওটস অত্যন্ত উপকারী। এতে দ্রবণীয় ফাইবার (beta-glucan) থাকে।
বিভিন্ন ধরনের মিলেট (Millets): জোয়ার, বাজরা, রাগি, কাউন, চিনা – এগুলো ফাইবারে ভরপুর এবং কম GI যুক্ত।
বার্লি (Barley): ফাইবার সমৃদ্ধ এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
কিনোয়া (Quinoa): একটি সম্পূর্ণ প্রোটিন এবং কম GI যুক্ত শস্য, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর।
২. প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি:
শাকসবজিতে ক্যালরি কম এবং ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ বেশি থাকে। সবুজ শাকসবজি বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এদের কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে।
সবুজ শাক: পালং শাক, পুঁই শাক, সর্ষে শাক, লাউ শাক, কলমি শাক, ডেটা শাক – প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
তরকারি হিসেবে ব্যবহৃত সবজি: শিম, বরবটি, লাউ, ঝিঙ্গা, পটোল, করলা, ঢেঁড়স, চালকুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রোকলি, কুমড়া (সীমিত পরিমাণে), ক্যাপসিকাম – এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
মূলা ও গাজর (কাঁচা বা অল্প রান্না): পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, তবে গাজর বেশি রান্না করলে GI বাড়তে পারে।
পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা লঙ্কা: রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এগুলোরও অ্যান্টি-ডায়াবেটিক গুণাগুণ আছে।

৩. ফল (পরিমিত পরিমাণে ও নির্দিষ্ট ফল):
ফল পুষ্টিকর হলেও, কিছু ফলে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই কম GI যুক্ত ফল এবং পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। ফলের রস (জুস) পরিহার করে গোটা ফল খাওয়া ভালো।
কম GI যুক্ত ফল: পেয়ারা, আপেল, কমলালেবু, জাম, জামরুল, শশা, টমেটো, বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি) – এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
সাইট্রাস ফল: লেবু, বাতাবি লেবু – ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
তরমুজ (Watermelon) ও বাঙ্গি (Cantaloupe): উচ্চ জলীয় উপাদান থাকলেও, এগুলোতে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, তাই পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।
Read More: Egg Benefits and Nutrition | ডিমের উপকারিতা ও পুষ্টি
৪. ডিম ও চর্বিহীন প্রোটিন:
প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে এবং পেশী গঠনে সহায়ক।
ডিম: সকালের নাস্তায় একটি বা দুটি ডিম খুব উপকারী।
চর্বিহীন মাংস: মুরগির বুকের মাংস (চামড়া ছাড়া), টার্কি।
মাছ: বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ (স্যামন, টুনা, সার্ডিন) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। দেশীয় মাছ যেমন রুই, কাতলা (চর্বিহীন অংশ), শিং, মাগুর, পাবদা ইত্যাদি।
ডাল: মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা, অড়হর ডাল, রাজমা (Kidney Beans), কাবলি ছোলা (Chickpeas) ইত্যাদি। এগুলি ফাইবার ও প্রোটিনের ভালো উৎস।
পনির (Paneer): কম ফ্যাট পনির বা টোফু (Tofu) প্রোটিনের ভালো উৎস হতে পারে।

৫. স্বাস্থ্যকর চর্বি:
অসম্পৃক্ত চর্বি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
সরিষার তেল, অলিভ অয়েল, ক্যানোলা অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল: রান্নার জন্য (পরিমিত পরিমাণে)।
বাদাম: বাদাম, আখরোট, কাঠবাদাম, পেস্তা – পরিমিত পরিমাণে স্ন্যাকস হিসেবে।
বীজ: চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড (তিসি), কুমড়ো বীজ, সূর্যমুখী বীজ – ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবারের ভালো উৎস।
অ্যাভোকাডো: স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।
৬. দুগ্ধজাত পণ্য (কম ফ্যাটযুক্ত):
- চিনি ছাড়া দই বা টক দই: প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, হজমে সহায়ক এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে উপকারী।
- ফ্যাট-ফ্রি দুধ: চায়ের জন্য বা এমনি পান করার জন্য।
- ছানা: প্রোটিনের একটি ভালো উৎস।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন না:
কিছু খাবার আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই খাবারগুলো কঠোরভাবে এড়িয়ে চলা উচিত।
১. উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত শ্বেতসার:
এই খাবারগুলি দ্রুত ভেঙে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
- সাদা চাল ও সাদা আটার তৈরি খাবার: সাদা ভাত, সাদা রুটি, পাউরুটি, ময়দার লুচি, পরোটা, নান রুটি।
- আলু: উচ্চ শ্বেতসার যুক্ত হওয়ায় রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়ায় (আলু ভাজি, আলুর চপ, আলুর দম)।
- মিষ্টি আলু (Sweet Potato): যদিও কিছু পুষ্টি আছে, তবে এতে শর্করার পরিমাণ বেশি। পরিমাণে খুব কম এবং মাঝে মাঝে গ্রহণ করা উচিত।
২. চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার:
Read More: সকালের ব্যায়ামের ৭টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
এগুলো সরাসরি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর।
- সরাসরি চিনি, গুড়, মধু, জেলি, জ্যাম: রান্নার স্বাদ বাড়াতে চিনি পরিহার করুন।
- মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, লাড্ডু: যেকোনো ধরনের মিষ্টি।
- মিষ্টি দই, মিষ্টি বিস্কুট, কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, আইসক্রিম: এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে লুকানো চিনি ও অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে।
- মিষ্টি পানীয়: কোলা, সোডা, প্যাকেটজাত ফলের রস (ফ্রুট জুস), এনার্জি ড্রিংকস – এগুলিতে উচ্চ মাত্রায় চিনি থাকে এবং দ্রুত শর্করা বাড়ায়।
৩. প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড (Processed & Fast Foods):
এগুলোতে প্রায়শই লুকানো চিনি, অস্বাস্থ্যকর ট্রান্স ফ্যাট, অতিরিক্ত সোডিয়াম এবং কৃত্রিম উপাদান থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
- ফাস্ট ফুড: পিজ্জা, বার্গার, ফ্রাইড চিকেন, হট ডগ, স্যান্ডউইচ (সাদা পাউরুটিতে তৈরি)।
- প্যাকেটজাত স্ন্যাকস: চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ক্র্যাকার্স, প্রক্রিয়াজাত নুডুলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ।
- ক্যানড ফুড: অনেক ক্যানড সবজি বা ফলে অতিরিক্ত চিনি বা লবণ থাকতে পারে। কেনার আগে লেবেল দেখে নিন।
৪. অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার:
অস্বাস্থ্যকর চর্বি ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা (insulin resistance) বাড়াতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
- লাল মাংসের চর্বিযুক্ত অংশ: যেমন খাসির মাংসের চর্বি।
- তেলে ভাজা খাবার: পুরি, সিঙ্গারা, সমুচা, চপ, ফিশ ফ্রাই, চিকেন পাকোড়া।
- স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট: ঘি, মাখন (অতিরিক্ত পরিমাণে), মার্জারিন, বনস্পতি, প্রক্রিয়াজাত পনির।
৫. নির্দিষ্ট কিছু ফল (অতিরিক্ত পরিমাণে):
যদিও ফল স্বাস্থ্যকর, তবে কিছু ফলে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে এবং সেগুলো বেশি পরিমাণে খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
- অতি পাকা আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা (বিশেষ করে বেশি পাকা), আঙ্গুর: এই ফলগুলো বেশি পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। পরিমিত পরিমাণে (খুব অল্প) এবং চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা উচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস: কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ: একবারে বেশি না খেয়ে সারা দিনে ৫-৬টি ছোট ছোট ভাগে খাবার গ্রহণ করুন। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত খাবার গ্রহণ: কোনো বেলার খাবার বাদ দেবেন না। নিয়মিত বিরতিতে খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া রোধ হয়।
- প্রচুর জল পান: চিনি ছাড়া জল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখে।
- ফাইবারে জোর দিন: ফাইবার রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। তাই শাকসবজি, ডাল, বাদামী চাল এবং গোটা শস্য বেশি করে খান।
- খাবার লেবেল পড়ুন: প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য (নিউট্রিশন লেবেল) ভালোভাবে পড়ে নিন। বিশেষ করে চিনি, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের পরিমাণ দেখুন।
- সক্রিয় জীবনযাপন: খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত জরুরি।
- বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: একজন পুষ্টিবিদ (Dietitian) বা ডায়াবেটোলজিস্টের (Diabetologist) সাথে পরামর্শ করে আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা, জীবনযাত্রা এবং ওষুধের উপর ভিত্তি করে একটি উপযুক্ত ডায়েট প্ল্যান তৈরি করে নিন।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ):
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন?
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত শস্য (যেমন বাদামী চাল, ওটস, লাল আটার রুটি), প্রচুর সবুজ শাকসবজি, কম চিনিযুক্ত ফল (পেয়ারা, আপেল, জাম), চর্বিহীন প্রোটিন (ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, ডাল) এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (অলিভ অয়েল, বাদাম) খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিসে কী খাবেন না?
ডায়াবেটিসে চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার (মিষ্টি, গুড়, জুস), সাদা চাল ও সাদা আটার তৈরি খাবার (সাদা ভাত, পাউরুটি), আলু, প্রক্রিয়াজাত খাবার (ফাস্ট ফুড, চিপস) এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ভাজাভুজি কঠোরভাবে এড়িয়ে চলা উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি ভাত খেতে পারবে?
হ্যাঁ, ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমিত পরিমাণে ভাত খেতে পারবেন। তবে সাদা ভাতের পরিবর্তে বাদামী চাল (ব্রাউন রাইস) বা হাতে ভানা চাল খাওয়া ভালো, কারণ এগুলোতে ফাইবার বেশি থাকে এবং রক্তে শর্করা ধীরে ধীরে বাড়ে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কোন ফল ভালো?
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পেয়ারা, আপেল, কমলালেবু, জাম, জামরুল, শশা, টমেটো, এবং বিভিন্ন ধরনের বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি) ভালো। এগুলি কম শর্করা এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত ফল।
ডায়াবেটিসে কি ডিম খাওয়া যায়?
হ্যাঁ, ডায়াবেটিসে ডিম খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। ডিমে উচ্চ মানের প্রোটিন থাকে এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। তবে, হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে কুসুম গ্রহণের পরিমাণ সীমিত রাখা যেতে পারে, যা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারণ করা উচিত।
ডায়াবেটিস রোগী মিষ্টি খেতে পারবে কি?
ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি এবং চিনিযুক্ত মিষ্টি খাবার কঠোরভাবে পরিহার করা উচিত। তবে, কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরিমিত পরিমাণে প্রাকৃতিক সুইটেনার (যেমন স্টিভিয়া) ব্যবহার করে তৈরি চিনিমুক্ত মিষ্টি বা সুগার-ফ্রি পণ্য খাওয়া যেতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিত?
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সকালের নাস্তায় ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকা উচিত। যেমন: চিনি ছাড়া ওটস, ডিম, আটার রুটি বা লাল আটার রুটি, ছোলা, সবজি দিয়ে তৈরি সুজি, বা ডাল।
ডায়াবেটিসে কি দুধ খাওয়া যায়?
হ্যাঁ, ডায়াবেটিসে দুধ খাওয়া যায়, তবে লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি দুধ বেছে নেওয়া উচিত। এটি ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের ভালো উৎস। তবে মিষ্টি দুধের বদলে টক দই বা ছানা বেশি উপকারী।
পরিশেষে:
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ হলেও, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এটিকে সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনার খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হোন, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, আপনার খাবারই আপনার ওষুধ – সঠিক খাবার নির্বাচন আপনাকে সুস্থ ও কর্মচঞ্চল জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে।