signs-of-for-pregnancy

গর্ভধারণের কোন লক্ষণ: ৯৯% মহিলার শরীরে দেখা যায়

গর্ভধারণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি নারীর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। যারা মা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের শরীরে আসা ছোটখাটো পরিবর্তনও খুব মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করেন। তবে, এমন একটি লক্ষণ আছে যা প্রায় ৯৯ শতাংশ মহিলার শরীরেই গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা যায় এবং এটি অনেকটাই নিশ্চিতভাবে সুখবরের ইঙ্গিত বহন করে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে, আজ আমরা সেই অব্যর্থ লক্ষণটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ কী?

যদি আপনার মাসিক নিয়মিত হয় এবং হঠাৎ নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড না আসে, তবে এটি গর্ভধারণের সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রায় নিশ্চিত লক্ষণ


কেন মাসিক বন্ধ হওয়া গর্ভধারণের প্রধান লক্ষণ?

মাসিক ঋতুস্রাব তখনই হয় যখন ডিম্বাণু নিষিক্ত না হয়ে জরায়ুর ভেতরের স্তর (Endometrium) ভেঙে রক্তপাতের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিন্তু গর্ভধারণের ক্ষেত্রে:

  • নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে স্থাপিত হয়।
  • শরীর প্রোজেস্টেরন ও hCG হরমোন নিঃসরণ করে, যা জরায়ুর স্তরকে অক্ষত রাখে।
  • ফলে, মাসিক বন্ধ হয়ে যায়

ওভুলেশনের কোন লক্ষণগুলো দেখে মিলন করলে মাত্র একবারের মিলনেই গর্ভবতি হবে ?


গর্ভধারণের অন্যান্য প্রাথমিক লক্ষণ

মাসিক বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোও দেখা দিতে পারে:

১. বমি বমি ভাব বা মর্নিং সিকনেস

  • সকালে বমি ভাব বা বমি হওয়া (হরমোনের প্রভাবে)।
  • প্রথম ত্রৈমাসিকে বেশি দেখা যায়।

২. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা

  • প্রোজেস্টেরন হরমোনের বৃদ্ধি ক্লান্তি বাড়ায়।

৩. স্তনের পরিবর্তন

  • স্তনে ফোলাভাব, কোমলতা বা বোঁটার রং গাঢ় হওয়া।

৪. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ

  • কিডনি বেশি তরল প্রক্রিয়াকরণ করে বলে প্রস্রাবের চাপ বাড়ে।

৫. খাবারের রুচিতে পরিবর্তন

  • কিছু খাবারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বা বিতৃষ্ণা জন্মাতে পারে।

৬. মেজাজের ওঠানামা

  • হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মুড সুইং হয়।

৭. মাথা ঘোরা বা হালকা জ্ঞান হারানো

  • রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে হতে পারে।

কখন নিশ্চিত হবেন?

মাসিক বন্ধ হওয়া গর্ভধারণের প্রধান লক্ষণ হলেও অন্যান্য কারণেও (স্ট্রেস, থাইরয়েড, PCOS) পিরিয়ড মিস হতে পারে। তাই:
> হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন (মিসড পিরিয়ডের ১ সপ্তাহ পর)।
> ডাক্তারের পরামর্শ নিন (রক্ত পরীক্ষা বা Ultra Sound Test)।


প্রয়োজনীয় পরামর্শ

  • নিয়মিত মাসিক থাকলে ১ সপ্তাহ অপেক্ষা করে টেস্ট করুন।
  • অনিয়মিত পিরিয়ড হলে অন্যান্য লক্ষণ দেখে ডাক্তার দেখান।
  • পজিটিভ রিপোর্ট এলে প্রাথমিক প্রেগন্যান্সি কেয়ার শুরু করুন।

সতর্কতা

শরীরের পরিবর্তন বুঝতে পারলেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুরু করুন। ধূমপান, মদ্যপান ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন।


Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।