স্ক্যাবিস হলে কী কী করা উচিত?

স্ক্যাবিসের যন্ত্রণায় ভুগতেছি? আয়ুর্বেদিক সমাধান আছে!

Share This Post

ওহ বাবা! স্ক্যাবিসের যন্ত্রণা যে কী, তা ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন। শরীর জুড়ে অসহ্য চুলকানি, রাতের বেলা তো ঘুমানোই দায়! মনে হয় যেন সারা শরীরে কিলবিল করছে কিছু। চিন্তা নেই, বন্ধু। আয়ুর্বেদে এর চমৎকার সমাধান আছে। আমি, আপনার আয়ুর্বেদিক বন্ধু, আজ আপনাদের স্ক্যাবিস নিয়ে বিস্তারিত জানাব এবং এর থেকে মুক্তির কিছু সহজ উপায় বলব।

স্ক্যাবিস, যাকে আমরা সাধারণ ভাষায় পাঁচড়া বা খোসপাঁচড়া বলে থাকি, আসলে এক প্রকার ক্ষুদ্র জীবাণুর (Sarcoptes scabiei) কারণে হয়। এই জীবাণু ত্বকের একদম উপরের স্তরে বাসা বাঁধে এবং ডিম পাড়ে। এর ফলেই শরীরে তীব্র চুলকানি শুরু হয়, বিশেষ করে রাতের দিকে।

স্ক্যাবিস কেন হয়?

স্ক্যাবিস মূলত একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়। এর প্রধান কারণগুলো হল:

  • সরাসরি সংস্পর্শ: স্ক্যাবিস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি চামড়ার সংস্পর্শে এলে এই রোগ ছড়াতে পারে।
  • পোশাক ও বিছানা: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা পোশাক, বিছানা, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহার করলে জীবাণু আপনার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে।
  • ঘন জনবসতি: যেখানে অনেক লোক একসাথে থাকে (যেমন – ছাত্রাবাস, জেলখানা), সেখানে স্ক্যাবিস দ্রুত ছড়াতে পারে।

মনে রাখবেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলেও স্ক্যাবিস হতে পারে, কারণ এটি জীবাণুর সংক্রমণ।

স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো কী কী?

স্ক্যাবিসের প্রধান লক্ষণ হল অসহ্য চুলকানি। তবে এর সাথে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায়:

  • তীব্র চুলকানি: বিশেষ করে রাতের বেলা বা গরমকালে চুলকানি আরও বাড়ে।
  • ছোট ছোট লালচে দানা বা ফুসকুড়ি: ত্বকের বিভিন্ন অংশে, যেমন – আঙ্গুলের ফাঁকে, কবজিতে, কনুইতে, বগলে, কোমরে, নাভির চারপাশে, যৌনাঙ্গে এবং নিতম্বে এই দানাগুলো বেশি দেখা যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মুখ, মাথার ত্বক এবং পায়ের পাতায়ও হতে পারে।5
  • ক্ষুদ্র সুড়ঙ্গের মতো দাগ (Burrows): ত্বকের উপর খুব ছোট, আঁকাবাঁকা সুড়ঙ্গের মতো দাগ দেখা যেতে পারে, যেখানে মাইট বাসা বাঁধে।
  • আঁচিলের মতো ক্ষত: চুলকাতে চুলকাতে ত্বকে ছোট ছোট আঁচিলের মতো ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
  • ত্বকের প্রদাহ ও চামড়া ওঠা: দীর্ঘদিনের সংক্রমণে ত্বক লালচে ও খসখসে হয়ে যেতে পারে।

যদি আপনার এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করা উচিত।

স্ক্যাবিসের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা :

আয়ুর্বেদে স্ক্যাবিসের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন প্রকার ভেষজ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি রয়েছে যা চুলকানি কমাতে, জীবাণু ধ্বংস করতে এবং ত্বককে সুস্থ করতে সাহায্য করে।

নিম (Neem): নিম হল আয়ুর্বেদের এক অমূল্য ভেষজ। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ স্ক্যাবিসের জীবাণু মারতে এবং চুলকানি কমাতে খুব কার্যকরী।

  • ব্যবহার:
    • নিম পাতা বেটে শরীরে লাগান এবং শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
    • নিম তেল (Neem Oil) সামান্য নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান।
    • নিম পাতা সেদ্ধ করা জল দিয়ে স্নান করুন।

হলুদ (Haldi/Turmeric): হলুদ তার অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণের জন্য পরিচিত।6 এটি ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং জীবাণু সংক্রমণ রোধ করে।

  • ব্যবহার:
    • কাঁচা হলুদ বেটে নিম পাতার সাথে মিশিয়ে শরীরে লাগান।
    • হলুদ গুঁড়ো নারকেল তেল বা নিম তেলের সাথে মিশিয়ে লাগান।

কর্পূর (Karpoor/Camphor): কর্পূরের শীতলীকরণ এবং অ্যান্টিপ্রুরিটিক (চুলকানি কমানো) বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

  • ব্যবহার:
    • কর্পূর গুঁড়ো সামান্য নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলকানির স্থানে লাগান। (খেয়াল রাখবেন, কাটা বা ক্ষত স্থানে সরাসরি কর্পূর লাগাবেন না)।

অ্যালোভেরা (Ghrit Kumari/Aloe Vera): অ্যালোভেরার শীতলীকরণ এবং ত্বক প্রশান্তিদায়ক গুণ চুলকানি কমাতে এবং ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে সাহায্য করে।

  • ব্যবহার:
    • তাজা অ্যালোভেরা জেল বের করে সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগান।

অন্যান্য ভেষজ: আয়ুর্বেদে আরও অনেক ভেষজ আছে যা স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়, যেমন – গন্ধক (Gandhak), ত্রিফলা (Triphala), করঞ্জ তেল (Karanja Oil) ইত্যাদি। তবে এগুলোর ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

স্ক্যাবিস হলে কী কী করা উচিত?


আসুন, স্ক্যাবিস হলে কী কী করা উচিত, সেই বিষয়ে প্রতিটি নিয়ম বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক:

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার পাশাপাশি কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা জরুরি:

স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় কেবল আয়ুর্বেদিক ঔষধ ব্যবহার করাই যথেষ্ট নয়। জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা অপরিহার্য। এই নিয়মগুলো আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেয়।

১. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা: নিজের এবং পরিবারের সকলের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন।

  • নিয়মিত স্নান: প্রতিদিন পরিষ্কার জলে স্নান করুন। এটি ত্বক থেকে ময়লা এবং জীবাণু দূর করতে সাহায্য করবে। তবে, খুব বেশি গরম জল ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি চুলকানি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। হালকা গরম বা ঠান্ডা জল ব্যবহার করাই ভালো।
  • হাত ধোয়া: বিশেষ করে খাবার আগে ও পরে, টয়লেট ব্যবহারের পর এবং আক্রান্ত স্থান স্পর্শ করার পর সাবান ও জল দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়া অত্যন্ত জরুরি। এটি জীবাণুর বিস্তার রোধে সাহায্য করবে। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও এই অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
  • কাপড় ধোয়া: প্রতিদিন পরিষ্কত পোশাক পরিধান করুন। ব্যবহৃত পোশাক গরম জল এবং ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

২. পোশাক ও বিছানা: প্রতিদিন নিজের এবং পরিবারের সকলের পোশাক, বিছানা, তোয়ালে গরম জল দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকান। সম্ভব হলে ইস্ত্রি করুন।

  • গরম জলের ব্যবহার: স্ক্যাবিসের জীবাণু এবং ডিম ধ্বংস করার জন্য পোশাক, বিছানার চাদর, বালিশের কভার এবং তোয়ালে কমপক্ষে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় ১০ মিনিটের জন্য গরম জলে ধোয়া উচিত।
  • কড়া রোদে শুকানো: ধোয়ার পর কাপড় ও বিছানার জিনিসপত্র কড়া রোদে শুকানো জীবাণু মারার আরেকটি কার্যকর উপায়। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
  • ইস্ত্রি করা: সম্ভব হলে ধোয়া এবং রোদে শুকানোর পর কাপড় ও বিছানার জিনিসপত্র ইস্ত্রি করুন। ইস্ত্রির তাপ অবশিষ্ট জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়ক হতে পারে।
  • প্রতিদিনের পরিবর্তন: আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক, বিছানার চাদর এবং তোয়ালে প্রতিদিন পরিবর্তন করা উচিত এবং ব্যবহারের পর তা আলাদাভাবে গরম জলে ধুতে হবে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও এই সময়কালে প্রতিদিন পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করা উচিত।

৩. আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিস আলাদা: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসপত্র (পোশাক, তোয়ালে ইত্যাদি) অন্যদের থেকে আলাদা রাখুন।

  • জীবাণুর বিস্তার রোধ: স্ক্যাবিস অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা পোশাক, তোয়ালে, বিছানার চাদর বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত জিনিস পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করলে তাদেরও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ: সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র সম্পূর্ণ আলাদা রাখতে হবে এবং সেগুলো অন্যদের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ধোয়ার সময়ও আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিস আলাদাভাবে ধোয়া উচিত।

৪. সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি চামড়ার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।

  • জীবাণু স্থানান্তর: স্ক্যাবিসের জীবাণু সরাসরি চামড়ার সংস্পর্শের মাধ্যমেই ছড়ায়। তাই, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে আলিঙ্গন, হাত মেলানো বা অন্য কোনো সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষ করে চিকিৎসার প্রথম কয়েক সপ্তাহে যখন জীবাণুর সংক্রমণ বেশি থাকে।
  • পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা: পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের এই রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য এই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

৫. চুলকানি কমানো: চুলকানি কমাতে ঠান্ডা জল ব্যবহার করুন বা বরফ সেঁক দিন।

  • তাত্ক্ষণিক আরাম: চুলকানি স্ক্যাবিসের একটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক লক্ষণ। ঠান্ডা জল বা বরফ সেঁক দিলে সাময়িকভাবে চুলকানি কমতে পারে এবং আরাম পাওয়া যায়।
  • প্রদাহ হ্রাস: ঠান্ডা তাপমাত্রা ত্বকের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।
  • ব্যবহারের নিয়ম: পরিষ্কার কাপড়ে বরফ মুড়ে অথবা ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে আলতোভাবে ধরুন। সরাসরি বরফ ত্বকে লাগানো উচিত নয়।

৬. নখ ছোট রাখুন: নখ ছোট রাখলে চুলকানোর সময় ত্বকের ক্ষতি কম হবে এবং জীবাণু নখের নীচে জমতে পারবে না।

  • ক্ষত প্রতিরোধ: চুলকানির সময় আমরা না জেনেও ত্বক আঁচড়ে ফেলি, যা ত্বকের ক্ষতি করে এবং ক্ষত সৃষ্টি করে। ছোট নখ থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।
  • জীবাণু আশ্রয় রোধ: স্ক্যাবিসের জীবাণু এবং ডিম নখের নীচে আশ্রয় নিতে পারে। নখ ছোট রাখলে জীবাণু জমা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকিও হ্রাস পায়। নিয়মিত নখ কাটা এবং পরিষ্কার রাখা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৭. ধৈর্য ধরুন: স্ক্যাবিসের চিকিৎসা সময় নিতে পারে। ধৈর্য ধরে নিয়ম মেনে চলুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন।

  • সম্পূর্ণ নিরাময়: স্ক্যাবিসের জীবাণু সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে এবং ত্বকের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। চুলকানি দ্রুত কমে গেলেও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো কোর্সের ঔষধ ব্যবহার করা জরুরি।
  • পুনরায় সংক্রমণ রোধ: চিকিৎসার পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং অন্যান্য নিয়ম মেনে চললে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো যায়।
  • মানসিক সমর্থন: দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি এবং চিকিৎসার কারণে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। ধৈর্য ধরুন এবং পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা ও সমর্থন নিন।

এই নিয়মগুলো আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার কার্যকারিতা বাড়াতে এবং স্ক্যাবিস থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে সহায়ক হবে। মনে রাখবেন, সঠিক রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য একজন অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।

স্ক্যাবিস নিয়ে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা :

প্রশ্ন : স্ক্যাবিস কত দিনে ভালো হয়?

উত্তর: সঠিক চিকিৎসা শুরু করার পর স্ক্যাবিসের চুলকানি সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই কমতে শুরু করে। তবে সম্পূর্ণ জীবাণু নির্মূল হতে এবং ত্বকের ক্ষত সারতে ২-৪ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো কোর্স ঔষধ ব্যবহার করা জরুরি, এমনকি চুলকানি কমে গেলেও।

প্রশ্ন : আমার সারা শরীরে খুব চুলকানি, রাতে ঘুমোতে পারি না, এটা কি স্ক্যাবিস হতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, সারা শরীরে তীব্র চুলকানি, বিশেষ করে রাতের বেলা বাড়লে, স্ক্যাবিসের একটি প্রধান লক্ষণ। তবে নিশ্চিতভাবে জানার জন্য একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তিনি আপনার ত্বক পরীক্ষা করে সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারবেন।

প্রশ্ন : স্ক্যাবিসের মলমের নাম কি?

উত্তর: স্ক্যাবিসের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন প্রকার মলম ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদিক মলমের মধ্যে নিম তেল, হলুদ ও নিম মিশ্রিত মলম ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় Permethrin cream, Ivermectin lotion ইত্যাদি বহুল ব্যবহৃত।তবে কোন মলম আপনার জন্য সঠিক, তা জানার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

প্রশ্ন : আমার বাচ্চার শরীরে ছোট ছোট লাল দানা হয়েছে এবং খুব চুলকাচ্ছে, কী করব?

উত্তর: বাচ্চাদের শরীরে ছোট ছোট লাল দানা এবং চুলকানি দেখা দিলে তা স্ক্যাবিস হতে পারে। বাচ্চাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল হয়, তাই নিজে থেকে কিছু না করে দ্রুত একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন। তিনি সঠিক রোগ নির্ণয় করে আপনার বাচ্চার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করবেন।

প্রশ্ন : স্ক্যাবিস কি ছোঁয়াচে?

উত্তর: হ্যাঁ, স্ক্যাবিস অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি চামড়ার সংস্পর্শে এলে অথবা তার ব্যবহার করা জিনিসপত্র ব্যবহার করলে এই রোগ খুব সহজে ছড়াতে পারে। তাই পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যদেরও পরীক্ষা করানো এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

মনে রাখবেন, স্ক্যাবিসের চিকিৎসা ধৈর্য ধরে করতে হয় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অপরিহার্য। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করার আগে অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন। যদি আপনার স্ক্যাবিস হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তিনি সঠিক রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। ঘরোয়া টোটকা হয়তো কিছু ক্ষেত্রে সামান্য উপশম দিতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে রোগমুক্তির জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা অত্যাবশ্যক। সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন!


Share This Post

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।